
জুলাই জাতীয় সনদ যেভাবে রচিত, প্রণীত ও স্বাক্ষরিত হয়েছে তা অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপালনের জন্য বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘গণভোটের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন হয়ে যাবে না; গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনও হয়ে যাবে না। তার জন্য অবশ্যই জাতীয় সংসদ গঠিত হতে হবে।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে ‘নারীর ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অসম্মান : প্রতিরোধে প্রস্তুত সচেতন নারী সমাজ শীর্ষক’ মৌন মিছিল-পূর্ব সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সমাবেশ শেষে মুখে কালো কাপড় বেঁধে শাহবাগ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মৌন মিছিল করেন নারীরা।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জাতীয় সংসদের আলোচনাসভা ও কার্যক্রম আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যায় না—তাই তার বিশেষ মর্যাদা। তাই জাতীয় সংসদের সার্বভৌমত্বকে ডিক্টেট করার মতো কোনো প্রস্তাব বা উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য নয়, এটা আমরা পুনরুচ্চারণ করছি।’
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, “দেশে একটি দল আছে যারা ধর্মের নামে ব্যবসা করে, রাজনীতির ব্যবসা করে, বিভিন্ন ধরনের ‘জান্নাতের টিকিট’ বিক্রি করে ভোটের বৈতরণী পার হতে চায়।
তাদের হাতে আজ নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। তারা চায় এই দেশের নারীরা ঘরের অন্তরালে বন্দি থাকুক। যেন বাংলাদেশের অর্ধেক জনসমষ্টি অন্ধকারে থাকে এবং নারীরা অগ্রগতিহীন থাকে।’
তিনি বলেন, ‘তারা বলছে—নারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিতে হবে।
অথচ কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিলে নারীদের কর্মসংস্থানই কমে যাবে। নারীরা কর্মস্থলে সম্মানের সঙ্গে কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। যারা এসব বক্তব্য দিচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য নিঃসন্দেহে খারাপ। তারা চায় নারীরা পিছিয়ে থাকুক, সমাজের অগ্রগতি থেমে যাক।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আজ আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি—কারণ রাজশাহীতে আমাদের বোনদের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে।
তাদের জুতাপেটা করা হয়েছে। একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী যারা ধর্মের নাম ব্যবহার করে রাজনীতি করে, তারা এই নির্যাতনে জড়িত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে শুধুমাত্র কথা বলার জন্য। তার বক্তব্য ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে আহত করেছে, এ কারণেই তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।’
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ৩৬ দিনব্যাপী যে জুলাই আন্দোলনে নারী-পুরুষ সমানভাবে সংগ্রাম করেছি, তার পর আমরা আমাদের মর্যাদা ফিরে পাব। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ আবার বাংলাদেশের নারী সমাজ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘নারীরা আজ বাংলাদেশে পেশাজীবী ক্ষেত্রে, শিক্ষায়, কর্মসংস্থানে সব জায়গায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। নারীরা অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছেন। এই সময়ে নারীর উন্নয়ন ব্যাহত করার চেষ্টা, ধর্মকে ব্যবহার করে গ্রামীণ নারীদের বিভ্রান্ত করা—গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্ম নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করতে হবে।’
নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় আরো বক্তব্য দেন শিরীন সুলতানা, নিলোফার চৌধুরী মনি, সানজিদা ইসলাম তুলি ও রেহানা আক্তার শিরীন প্রমুখ।
