
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেছেন, ২০১১ সালে অধিকাংশ সংখ্যালঘু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রেখেছিল, তাকে ক্ষমতায় এনেছিল। কিন্তু দিনের পর দিন মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন বলেই দাবি হুমায়ুনের। মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী করে সংখ্যালঘু মুসলমানরা কী পেয়েছে, প্রশ্ন তার।
সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন হুমায়ুন কবীর। অযোধ্যার বাবরি মসজিদ মুর্শিদাবাদে পুনর্নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে নিজ দলের তোপের মুখে পড়েন এ নেতা। এরপরই মূলত তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে, এত চাপের মুখে পড়েও বাবরি মসজিদ নির্মাণে অটল থেকেছেন তিনি। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) মসজিদের ভিত্ত প্রস্তর স্থাপন করেছেন তিনি। কিন্তু ভিত্তি প্রস্তরের সময় বা সংখ্যালঘু মুসলিমদের মসজিদ নির্মাণ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপধ্যায়ের চুপ থাকা নিয়ে ক্ষেপেছেন এই বিধায়ক।
ভারতীয় বাংলা সংবাদমাধ্যম টিভি৯ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলার রাজনীতিতে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক বরাবরই আলাদা তাৎপর্য পেয়েছে। শাসক দলের বিরুদ্ধে উঠেছে তোষণের অভিযোগ। অনেক বিতর্কের মুখে দাঁড়িয়েও সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার কথা বারবার বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইফতার কিংবা ইদের অনুষ্ঠানে নিয়ম করে যেতে দেখা গিয়েছে তাকে।
তবে বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের ভিত্তি প্রস্তরের ঠিক আগে মমতার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ তুলেছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তার প্রশ্ন, ১৫ বছরে সংখ্যালঘুরা কী পেয়েছে?
হুমায়ুন কবীরের দাবি, ২০১১ সালে অধিকাংশ সংখ্যালঘু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আস্থা রেখেছিল, তাকে ক্ষমতায় এনেছিল। কিন্তু দিনের পর দিন মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করেছেন বলেই দাবি বিধায়কের।
হুমায়ুন বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যা করবেন, সেটাই ঠিক। বাকিরা যা বলবে সেটা ভুল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত অহঙ্কার। তার প্রশ্ন, মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী করে কী পেয়েছে সংখ্যালঘুরা?
বিধায়ক বলেন, বাংলায় ৩৭ শতাংশ সংখ্যালঘু আছে। তাদের সিংহভাগের ভোট পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা। খুব অহঙ্কার হয়েছে। চূর্ণ করব আমি। আমি তাকে প্রাক্তন (পরাজিত) করবই।
নিজের দল গড়ে রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৯০টি আসনে প্রার্থী দেবেন বলেও এদিন জানিয়েছেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, মোট ১৩৫টি আসনে প্রার্থী দেব। বিধানসভায় যাব। প্রয়োজনে বিরোধী আসনে বসব। সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের দাবি জানাব। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে অধিকার বুঝে নেব।
মূলত মুসলিমদের নায্য অধিকারের জন্য তার সংগ্রাম বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন।
উল্লেখ্য, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩তম বার্ষিকীর দিন ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন হুমায়ুন। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় এ মসজিদ পুনর্নির্মানের কথা বলেন তিনি। এ ঘোষণায় ভারতজুড়ে বড় রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়।
হুমায়ুনের বাবরি মসজিদ তৈরির সিদ্ধান্ত ভালভাবে দেখেনি তার দল তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রেক্ষিতে ‘সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি নয়’-এই বার্তা দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে হুমায়ুনকে। তবে তাতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না হুমায়ুন। ঘোষণা অনুযায়ী শনিবারই তিনি মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করছেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায়।
