ঢাকাশনিবার , ৯ নভেম্বর ২০২৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উৎসব
  5. ঐতিহ্য
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গণমাধ্যম
  10. চাকরি
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. নির্বাচন
  15. পরিবেশ

‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নেবেন?’ সোহেল তাজ দিলেন ‘শর্ত’

নিউজ ডেস্ক
নভেম্বর ৯, ২০২৪ ৪:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের ছেলে তানজীব আহমেদ সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নে শর্ত দিয়েছেন।

শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির সাহিত্য বিশারদ আব্দুল করিম মিলনায়তনে এক আয়োজনে বক্তব্য দিতে গিয়ে এই প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি।
জবাবে ২০০৯ সালে গঠন করা আওয়ামী লীগ সরকারে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ পেলেও পরে অভিমান করে সরকার ও সংসদ থেকে পদত্যাগ করা নেতা বলেন, “নির্দিষ্ট কিছু দায় আওয়ামী লীগ মেনে না নিলে এ দলের নেতৃত্বে আসার প্রশ্নই উঠে না।”

ঐতিহ্য প্রকাশনীর আয়োজনে কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আহমাদ মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় ‘শতাব্দীর কণ্ঠস্বর তাজউদ্দীন আহমদ: কন্যার চোখে, পুত্রের চোখে’ শীর্ষক এক আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন বঙ্গতাজ পুত্র।

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সোহেল তাজ দলটির ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নানা পদক্ষেপ ও নীতির সমালোচনা করছেন। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিশানা করেও নানা বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। আলোচনার সঞ্চালক তার কাছে জানতে চান, “আওয়ামী লীগের হাল কি তাজউদ্দীন পরিবার বা সোহেল তাজ ধরবেন?”

জবাবে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের দায়িত্ব তখনই নেওয়ার প্রশ্ন আসবে, আওয়ামী লীগ সংগঠন হিসেবে যখন আত্মসমালোচনা শুরু করবে, আত্মোপলব্ধি করবে, তাদের কর্মকাণ্ডগুলো যখন স্বীকার করবে, যারা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়ে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে তারা জবাবদিহি করবে;

“যারা হত্যা, গম, খুনের সাথে জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেবে এবং আওয়ামী লীগ যখন পরিষ্কার হবে, তারপরে তারা যদি চায় আমি নেতৃত্বে আসি, তখন আমি বিবেচনা করব তার আগে নয়।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দুই বছর পর যখন আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়, তখন দলটির আহ্বায়ক হন সোহেল তাজের মা জোহরা তাজউদ্দীন। অসাধারণ দক্ষতায় তিনি দলকে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করেন। দলের তৃণমূল পর্যায়ে মনোবল ফিরিয়ে আনতে তিনি সারা দেশ সফর করেন।

শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে এসে দলের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর জোহরা তাজউদ্দীন আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্ষদ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।

এই প্রসঙ্গ টেনেই সঞ্চালক সোহেল তাজের কাছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন, যদিও ক্ষমতাচ্যুত দলটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রস্তাব নেই। শেখ হাসিনা ভারতে উড়ে যাওয়ার পর থেকে তিনিই নেতৃত্ব ধরে রেখেছেন। দলের কার্যক্রম ও নির্দেশনা চলছে ফেইসবুক পেজে। আর সামাজিক মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সোহেল তাজকে নিয়ে কটাক্ষকর পোস্ট দিচ্ছেন, তিনিও এসব সমালোচনার জবাব দিচ্ছেন ব্যাঙ্গাত্মকভাবে।

‘স্বাধীনতার পর অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন তাজউদ্দীন’

তাজউদ্দীন আহমেদ ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অনেক ‘অন্যায়ের’ প্রতিবাদ করেছেন বলেও মন্তব্য করলেন সোহেল তাজ।

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের কাউন্সিল মিটিংগুলোতে বারংবার তাজউদ্দীন আহমেদ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ করেছেন। তিনি দুর্নীতি ও ব্যবস্থাপনা ও দলীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।

“আমার মা ও তার জায়গা থেকে অনেকবার অসম্মান হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবাদ করেছেন। তারা তাদের জায়গা থেকে প্রতিবাদ করে গেছেন।”

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর তাজউদ্দীনসহ স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের চার শীর্ষ নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যার কথা তুলে ধরে সোহেল তাজ বলেন, “জেল হত্যার মাধ্যমে প্রমাণ হয় তিনি (তাজউদ্দীন আহমেদ) বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি।”

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সব তথ্য ‘লুকিয়ে না রেখে’ উন্মুক্ত করে দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

রাজনীতিতে আসব না: তাজউদ্দীন কন্যা

আলোচনা সভায় তাজউদ্দীনকন্যা শারমিন আহমেদ বলেন, সরাসরি রাজনৈতিক দল করার ইচ্ছা তার নেই।

“তরুণরা যদি মানুষের সেবা করতে সামনে এগিয়ে যেতে চায় তাহলে আমরা পাশে আছি, কিন্তু এই মুহূর্তে একেবারে সরাসরি রাজনৈতিক দল করার চিন্তা ভাবনা নেই। আরেকটা বড় রাজনীতি হল মানুষের সেবা করা, আমরা তাদেরকে সেবা দিচ্ছি।”

শারমিন আহমেদ তার লেখা ‘নেতা ও পিতা’ বই থেকে তাজউদ্দীন আহমেদ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরেন এবং তরুণ প্রজন্মকে ‘আসল ইতিহাস’ অনুসন্ধান করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “অনেক পিলারের উপর ইতিহাস দাঁড়ায়। কিন্তু তারা একটা ‘বঙ্গবন্ধু’ পিলারের উপর সব কিছু দাঁড় করিয়ে দিলেন, একজন নেতার একটা ন্যারেটিভেই উনারা (আওয়ামী লীগ) সীমাবদ্ধ ছিলেন।”

শিশু কিশোরদের মুক্তিযুদ্ধের অবদানের কথা আরও বেশি জানার চেষ্টার আহ্বান জানিয়ে তাজউদ্দীন কন্যা বলেন, “গত দুই বছর যাবৎ প্রতিটি স্কুলে রাসেল কর্নার আছে। রাসেল নিষ্পাপ শিশু, কিন্তু সে তো কোনো জাতীয় ব্যক্তিত্ব নয়।

“রাসেল কর্নারের বদলে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা কর্নার হত, বীরাঙ্গনা কর্নার করা হত, তাহলে বাচ্চাদেরকে মুক্তিযুদ্ধকে জানাতে পারা যেত।

“তাদেরকে জানতেই দেওয়া হয়নি, ওরা কী করে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গর্ব করবে?”

শিক্ষার্থীদের জন্যে বিশেষ বিবেচনায় কিছুটা মূল্য কমিয়ে বইটির নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেছে ঐহিত্য।

আলোচনা পর্বের শুরুতে সোহেল তাজ ও শারমিন আহমেদের হাতে নতুন সংস্করণের কপি তুলে দেন প্রকাশনা সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান নাইম।


সংবাদটি শেয়ার করুন....