
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশের তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জাতীয় উন্নয়নে সম্পৃক্ত করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) কার্যক্রমের গুণগত মান ও অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘বিএনসিসির মাধ্যমে জাতীয় রূপান্তর’ শীর্ষক উপস্থাপনার পরে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। উপস্থাপনাটি পেশ করেন বিএনসিসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সঈদ আল মসউদ।
সভায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সঈদ আল মসউদ বিএনসিসির বর্তমান কাঠামো, তরুণ কর্মশক্তি উন্নয়ন কাঠামো, জাতীয় যুব কর্মপরিকল্পনা, জনবল নিয়োগ, বাজেট, চ্যালেঞ্জ এবং সুপারিশের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।
তিনি জানান, বর্তমানে বিএনসিসির আওতায় ৫৬১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর শাখা স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আল মসউদ বলেন, ‘বিএনসিসিতে যোগদানের বয়সসীমা ১৭ থেকে ১৮ বছর। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ লাখ দক্ষ ক্যাডেট প্রশিক্ষণ দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।
’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিএনসিসির দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে বলেন, গুণগত প্রশিক্ষণ ও ভবিষ্যৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বিএনসিসির পক্ষে, কিন্তু আমাদের নজর দিতে হবে গুণগত মানে—বিশ্বাসযোগ্য ও যোগ্য প্রশিক্ষক থাকতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের মনোযোগী হতে হবে এবং ভবিষ্যৎমুখী ভাবনা নিতে হবে।’
অধ্যাপক ইউনূস আত্মমর্যাদা, শৃঙ্খলা ও অন্তর্ভুক্তিকে বিএনসিসির মূল মূল্যবোধ হিসেবে গুরুত্ব দেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনসিসি মানে আত্মমর্যাদা ও শৃঙ্খলা। ক্যাডেটদের জন্য এমন একটি সনদ প্রদান ব্যবস্থা থাকতে হবে, যা তাদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানে সহায়ক হবে। পাশাপাশি তাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগও তৈরি করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনসিসি শুধু ছেলেদের জন্য নয়; মেয়েদের সমান অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে হবে।’
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিএনসিসিকে আরো কার্যকর ও কর্মমুখী করে তুলতে হবে।
কোন পরিস্থিতিতে আমরা এই স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে লাগাতে পারি, তা বিবেচনা করতে হবে।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সাম্প্রতিক জাতীয় ঘটনাগুলোতে বিএনসিসির ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘যোগ্য প্রশিক্ষক নিয়োগকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিএনসিসি ক্যাডেটরা রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছিল—এটি ছিল অত্যন্ত সুন্দর ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’
প্রধান উপদেষ্টা বিএনসিসি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সরকার নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও নাগরিক দায়িত্ববোধের মাধ্যমে তরুণদের উন্নয়নকে জাতীয় রূপান্তরের মূলধারায় একীভূত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
