
নানা অজুহাতে ভোলার তজুমদ্দিন-মনপুরা নৌপথে চলাচলের একমাত্র নৌযান এসটি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাদ নামের সি-ট্রাকটি যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাতে গত ৮ মাস ধরে বন্ধ ছিল ।এ পথে চলাচলের সি-ট্রাকই একমাত্র বৈধ নৌযান। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই দ্বীপ উপজেলা মনপুরার দেড় লক্ষাধিক বাসিন্দার। উপায় না পেয়ে হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে অবৈধ ট্রলারে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীরা ।
স্থানীয় ও যাত্রীসাধারণের অভিযোগ, নানা অজুহাতে সি-ট্রাকটি অধিকাংশ সময় বন্ধ রাখা হয়। কখনও ট্রলার মালিকদের সঙ্গে আঁতাত করে পরিকল্পিতভাবে সি-ট্রাকটি বন্ধ রাখেন ইজারাদার। আবার যান্ত্রিক ত্রুটির কথা বলেও বন্ধ রাখেন। সর্বশেষ ২৮ আগষ্ট বুধবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কথা বললে সেটা তাদের যাচাই করারও কোনো উপায় নেই। তখন বাধ্য হয়েই তাদের ট্রলাররে যাতায়াত করতে হয়। চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় উপজেলার জরুরি রোগী ও তাদের স্বজনদের। মনপুরা উপজেলার বাসিন্দা হওয়ায় তাদের অনেকটা বন্দি অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে।
এদিকে শুক্রবার বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান ড. একেএম মতিউর রহমান মনপুরার হাজিরহাট ও রামনেওয়াজ ঘাট পরিদর্শনে আসছেন এমন খবরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি একদিন আগে ২৯ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) তড়িঘড়ি করে ভোলা-মজু চৌধুরী হাট রুটে চলাচলকারী একটি সি-ট্রাক এনে বিকেল থেকে তজুমুদ্দিন-মনপুরা রুটে যাত্রী পারাপার করেন।
তবে ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ, সি-ট্রাক ড্রাইভার ও বিআইডব্লিটিসি’র কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে টেন্ডারে পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মের্সাস ইয়ানুর এন্টার প্রাইজ সিন্ডিকেট করে সি-ট্রাকটি বন্ধ রেখে বেশি লাভের আশায় ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার করাতো। একই অভিযোগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মনপুরার ছাত্র নেতারা।
জানা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে দুই বছরের জন্য মনপুরা-তজুমুদ্দিন নৌরুটে সি-ট্রাকটি চলাচলে জন্য মেসার্স ইয়ানুর এন্টাপ্রাইজকে ইজারা দেয় বিআইডব্লিটিসি।
এদিকে অভিযোগের অস্বীকার করে মনপুরা-তজুমুদ্দিন নৌরুটে সি-ট্রাক ইজারা পাওয়া ইয়ানুর এন্টার প্রাইজের পক্ষে নুরু উদ্দিন জানান, এসটি শহীদ আবদুর রব সেরানিয়াবাদ সি-ট্রাকটি যান্ত্রিকত্রুটি সহ অন্যান্য মেরামতের কাজ নারায়নগঞ্জের বিআইডব্লিটিসি’র ডকইয়ার্ডে চলছে। সি-ট্রাক মেরামতে কাজ শেষ হলে ফের এই নৌরুটে চলাচল করবে।
এদিকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলা হাজিরহাট ল্যান্ডিং স্টেশন ও রামনেওয়াজ লঞ্চ ঘাট পরিদর্শনে আসেন বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান ড. একেএম মতিউর রহমান। পরে মনপুরা-তজুমুদ্দিন নৌরুটে দ্বীপ উপজেলার যাত্রীদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে দ্রুতগামীর একটি সি-ট্রাক প্রতিনিয়ত চলাচলের দাবী করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাঠান মোঃ সাঈদুজ্জামান, ওসি মোঃ জহিরুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
পরে বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান ড. একেএম মতিউর রহমান জানান, প্রতিনিয়ত মনপুরা-তজুমুদ্দিন রুটে যাত্রী পারাপারে সি-ট্রাক চালু থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন।