ঢাকাসোমবার , ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উৎসব
  5. ঐতিহ্য
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গণমাধ্যম
  10. চাকরি
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. নির্বাচন
  15. পরিবেশ

ভলকার তুর্কের ঢাকা সফরে প্রাধাণ্য পাবে মানবাধিকার-নিরাপত্তা-নির্বাচন

দ্য স্টার নিউজ ডেস্ক
অক্টোবর ২৮, ২০২৪ ৩:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক ২৯ থেকে ৩০ অক্টোবর ঢাকা সফর করছেন। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের পট পরিবর্তনের পর জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের এই সফরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুই দিনের এই সফরে ভলকার তুর্ক অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ ৬/৭ জন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, সেনাবাহিনী প্রধান, বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের প্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে মানবাধিকার, নিরাপত্তা এবং নির্বাচন প্রাধাণ্য পাবে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্কের এই সফরটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ভলকার তুর্ক সোমবার দিবাগত রাত দেড়টায় ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। এই সফরে মানবাধিকার, নিরাপত্তা এবং নির্বাচন ইস্যু গুরুত্ব পাবে। মানবাধিকার ইস্যুর মধ্যে জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত রয়েছে। নিরাপত্তা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্কারে জাতিসংঘের কাছে সহযোগিতা চায় অর্ন্তবর্তী সরকার। জাতিসংঘও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু কোন ফরমেটে, কীভাবে সহযোগিতা হতে পারে, তা ভলকার তুর্কের ঢাকা সফরের আলোচনার টেবিলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এগুলো গুরুত্ব সহকারে উভয়পক্ষের অবস্থান উপস্থাপন করার কথা রয়েছে। মানবাধিকার, নিরাপত্তা এবং নির্বাচন ইস্যুতে ঢাকা জাতিসংঘের কাছে নগদ সহায়তা চায়। সেক্ষেত্রে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা চায় যে এই নগদ সহায়তা কোন কোন খাতে এবং কিভাবে খরচ করা হবে, সে বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা। শুধু তাই নয় সেই সুপারিশমালা নিয়ে বাংলাদেশের রাজনেতিক অঙ্গনের ঐক্যমত থাকতে হবে। ভলকার তুর্কের এই সফরে এই বিষয়ে আলাপ হবে, তবে সফর শেষে এই ইস্যুতে রাজনৈতিক ঐক্যমত ইস্যুতে অর্ন্তবর্তী সরকার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। এছাড়া ঢাকায় জহাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খোলা নিয়েও ভলকার তুর্কের সফরে আলোচনা হতে পারে।

ঢাকায় অবস্থিত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে সোমবার জানান হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক ২৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ সফরে আসছেন। এই সফরে তিনি অন্যদের মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন। সফরকালে হাইকমিশনার বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি, সেনাপ্রধান এবং বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রধানদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। তুর্ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও একটি ভাষণ দেবেন, যেখানে তিনি সাম্প্রতিক প্রতিবাদ আন্দোলনের সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করবেন। তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং বাংলাদেশে কূটনৈতিক মিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। হাইকমিশনার তার মিশন শেষে আগামী ৩০ অক্টোবর বুধবার সাড়ে পাঁচটায় ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করবেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রবেশাধিকার কেবল অনুমোদিত মিডিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, গত ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্কের মধ্যে গত ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ পুর্নগঠন নিয়ে প্রথম আলোচনা হয়। গত জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা (মূলত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট সময়কাল পর্যন্ত সকল মানবাধিকার লঙ্ঘণ) ঘটেছে, সে সকল ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা গত ১৪ আগস্ট ভলকার তুর্কের সঙ্গে আলোচনায় গত জুলাই-আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে সহযোগিতা চান। তখনই জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত তদন্ত প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার বার্তা দেন। এর পরপরই জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রোরি মুনগোভেনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রাথমিক দল গত ২২ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা সফর করেন। ওই দলটি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে মূলত মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে অগ্রাধিকারমূলক কাজ কী হবে তা ঠিক করেন। এরপর গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মূল তথ্যানুসন্ধান দল ঢাকায় আসেন। ওই সময়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট সময়কালের মধ্যে বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য দেওয়ার জন্য সকল ব্যক্তি, গোষ্ঠী এবং সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানান। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন মূলত গত জুলাই ও আগস্টে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ ১৫ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের (এর মধ্যে রয়েছে- মানবতাবিরোধী অপরাধ, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা, রাজনৈতিক ও বেসরকারি পক্ষগুলোর মাধ্যমে হত্যা ও নির্যাতন, জনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার নামে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, নিবর্তনমূলক আটক ও গ্রেপ্তার, গুম, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি) ঘটনা তদন্ত করছে। ঢাকা সফরে এসে ভলকার তুর্ক জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের কর্মকাণ্ড সরেজমিন পরিদর্শন করবেন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করবেন। আগামী নভেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের আগে অন্তর্বর্তী সরকারকে দেওয়া হবে।


সংবাদটি শেয়ার করুন....