ঢাকাশনিবার , ১১ জানুয়ারি ২০২৫
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. উৎসব
  5. ঐতিহ্য
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গণমাধ্যম
  10. চাকরি
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. ধর্ম
  14. নির্বাচন
  15. পরিবেশ

নারীরা কোথায় ইদ্দত পালন করবেন

ইসলামী জীবন
জানুয়ারি ১১, ২০২৫ ১২:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংবাদটি শেয়ার করুন....

ইদ্দত একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ গণনা করা। ইসলামের পরিভাষায়, কোনো স্ত্রী তালাকপ্রাপ্ত হলে বা স্বামীর মৃত্যু হলে একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত স্ত্রীকে এক বাড়িতে থাকতে হয়, অন্যত্র যেতে পারেন না এবং অন্য কোথাও বিবাহ বসতে পারেন না—তাকে ইদ্দত বলে। ইদ্দত পালন করা নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক। এ বিষয়ে কোরআন ও হাদিসের সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়।

তালাকপ্রাপ্ত নারীদের ইদ্দত 
তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীদের ইদ্দতের সময় তিন হায়েজ (ঋতুস্রাব)। তালাক‌ দেওয়া তারিখের পর পূর্ণ তিন হায়েজ অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত ওই স্ত্রীর পক্ষে অন্যত্র বিবাহ বসা হারাম। ইদ্দত শেষে অন্য স্বামী গ্রহণ করতে পারবেন

কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীরা তিন ঋতু পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। আর তারা আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর ঈমান রাখলে তাদের গর্ভাশয়ে আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, তা গোপন রাখা তাদের পক্ষে হালাল নয়। আর যদি তারা আপস-নিষ্পত্তি করতে চায় তবে এতে তাদের পুনঃ গ্রহণে তাদের স্বামীরা বেশি হকদার। আর নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে, যেমন আছে তাদের ওপর পুরুষদের।আর নারীদের ওপর পুরুষদের মর্যাদা আছে। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২২৮)

গর্ভবতী ও অন্য নারীদের ইদ্দত
সাধারণ অবস্থায় তালাকের ইদ্দত পূর্ণ তিন হায়েজ। কিন্তু যেসব নারীর বয়োবৃদ্ধ অথবা কোনো রোগের কারণে হায়েজ বন্ধ হয়েছে, এভাবে যেসব নারীর অল্প বয়স হওয়ার কারণে এখনো হায়েজ আসা শুরু হয়নি—তাদের ইদ্দত তিন হায়েজের পরিবর্তে তিন মাস নির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং গর্ভবতী স্ত্রীদের ইদ্দত সন্তান প্রসব পর্যন্ত সাব্যস্ত করা হয়েছে; চাই যত তাড়াতাড়ি প্রসব হোক না কেন। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাদের যেসব স্ত্রীর আর ঋতুমতী হওয়ার আশা নেই, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করলে তাদের ইদ্দতকাল হবে তিন মাস এবং যারা এখনো ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি তাদেরও।

আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আর যে আল্লাহ তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ৪)স্পর্শের আগে তালাকের ইদ্দত নেই
যদি কোনো স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর সহবাস বা নির্জন বাস হওয়ার আগেই স্বামী তাকে তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাকে ইদ্দত পালন করতে হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! যখন তোমরা মুমিন নারীদের বিয়ে করবে, তারপর তাদের স্পর্শ করার আগে তালাক দেবে, তখন তোমাদের জন্য তাদের পালনীয় কোনো ইদ্দত নেই, যা তোমরা গুনবে। সুতরাং তোমরা তাদের কিছু সামগ্রী দেবে এবং সৌজন্যের সঙ্গে তাদের বিদায় করবে।’
(সুরা : আহজাব, আয়াত : ৪৯)

কোথায় ইদ্দত পালন করবেন?
তালাকপ্রাপ্ত বা সদ্য বিধবা হওয়া নারীদের জন্য স্বামীর বাড়িতে ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। বিশেষ ওজর ছাড়া স্বামীর বাড়ি ছাড়া বাবার বাড়িতে অথবা অন্য কোথাও গিয়ে ইদ্দত পালন করা জায়েজ নেই। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে নবী! তোমরা যদি তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দিতে ইচ্ছা করো তাহলে তাদের তালাক দিয়ো ইদ্দতের প্রতি লক্ষ রেখে, ইদ্দতের হিসাব রেখো এবং তোমাদের রব আল্লাহকে ভয় করো। তোমরা তাদের তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার কোরো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায়। এগুলো আল্লাহর বিধান। যে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করে সে নিজের ওপরই অত্যাচার করে। তুমি জান না! হয়তো আল্লাহ এরপর কোনো উপায় করে দেবেন।’
(সুরা : তালাক, আয়াত : ১)

স্বামীর বাড়িতে যদি পর্দার সঙ্গে থাকার ব্যবস্থা না হয় কিংবা তার জন্য সেখানে থাকা বেশি কষ্টকর বা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়, তাহলে সে বাড়ি ত্যাগ করে বাবার বাড়ি অথবা অন্য কোনো নিরাপদ স্থানে ইদ্দত পালন করতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে যেখানে যাবে সেখানেই ইদ্দত পূর্ণ করবে। ইদ্দত শেষ হওয়ার আগে বিনা কারণে সেখান থেকে অন্যত্র থাকা জায়েজ হবে না। ফাতিমা বিনতে কায়স (রা.) বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমার স্বামী আমাকে তিন তালাক দিয়েছেন, আমার আশঙ্কা হয় যে তিনি আমার ওপর চড়াও হবেন। তখন তিনি তাকে অন্যত্র চলে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন এবং তিনি চলে গেলেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৩৫৮৪)


সংবাদটি শেয়ার করুন....