
মানুষের ভয়ানক রোগগুলোর মধ্যে স্ট্রোক অন্যতম। স্ট্রোকের পর অনেকেই হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন।
এবার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ)-এর গবেষকরা একটি নতুন যুগান্তকারী ওষুধ তৈরি করেছেন, যা স্ট্রোক থেকে পুনরায় সুস্থ ধারা বদলে দিতে পারে। এই ওষুধটি গ্রহণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক থেরাপি ছাড়াই স্ট্রোকে হারিয়ে যাওয়া চলাফেরার ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে ফিরে আসবে। ইউসিএল কর্তৃক উদ্ধাবিত এই ওষুধটির নাম ‘ডিডিএল ৯২০’।
ইউসিএল’র নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং প্রধান গবেষক ড. থমাস কারমাইকেল জানিয়েছেন, এই ওষুধের মাধ্যমে স্ট্রোকের রোগীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরিয়ে আনার এক নতুন যুগের সূচনা হলো। প্রচলিত থেরাপি নয় বরং আণবিক চিকিৎসা বিজ্ঞান বা মলিকুলার মেডিসিনের ওপর এই যুগ আরও নির্ভরশীল হবে।
প্রাথমকিভাবে গবেষণাটি ইঁদুরের ওপর চালানো হয়। পরীক্ষায় দেখা গেছে, ডিডিএল ৯২০ মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করতে এবং হারানো স্নায়ু সংযোগ পুনরুদ্ধারে দারুণভাবে কাজ করেছে।
গবেষণা দলটি বর্তমানে মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ১৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং তাদের অনেকেই দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জীবন কাটান।
বর্তমানে স্ট্রোকের চিকিৎসায় মূলত দ্বিতীয়বার স্ট্রোক প্রতিরোধ এবং রোগীর জীবনমান উন্নয়নের দিকেই নজর দেওয়া হয়; কিন্তু মস্তিষ্কে ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া ক্ষতি সরাসরি ঠিক করার মতো কোনো ওষুধ এতদিন ছিল না।
যদিও ডিডিএল ৯২০ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে; তবে এর সম্ভাবনা ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক আশাবাদ তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ওষুধ ভবিষ্যতে শুধু স্ট্রোক নয়, অন্যান্য মস্তিষ্কের আঘাত ও স্নায়ুবিক অবক্ষয়জনিত রোগ চিকিৎসার ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।