
ইসরায়েলি বাহিনী রবিবার পশ্চিম তীরে গুলি চালিয়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক ফিলিস্তিনি নারীকে হত্যা করেছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা এ খবর জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ওই এলাকায় ‘সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলা চালিয়েছে।
রামাল্লাহর ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নূর শামস শরণার্থী শিবিরে স্থানীয় সময় ভোররাতে সংঘটিত এক ঘটনায় সুন্দুস জামাল মোহাম্মদ শালাবি নিহত হন।
এ সময় তার স্বামী ইয়াজান আবু শোলা গুরুতর আহত হন। ২৩ বছর বয়সী ওই নারীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দখলদার বাহিনী (ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী) আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেওয়ায় চিকিৎসকরা নবজাতক শিশুটিকে বাঁচাতে পারেননি।’
অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শালাবি ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হয়েছেন—এমন অভিযোগ তারা খতিয়ে দেখছে।
শিবিরের পপুলার কমিটির সদস্য মুরাদ আলিয়ান বলেন, ‘ভোরের দিকে এই ঘটনা ঘটে। তারা (নিহত নারী ও তার স্বামী) শিবির ছেড়ে যেতে চেয়েছিলেন, এর আগেই দখলদার বাহিনী সেখানে প্রবেশ করে। তাদের গাড়ির ভেতরে থাকা অবস্থায় গুলি করা হয়, এতে স্ত্রী ও তার শিশুর মৃত্যু হয় এবং স্বামী আহত হন।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এদিন ভোরে নূর শামস শরণার্থী শিবিরে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালায়, যা তুলকারেম ও জেনিনের নিকটবর্তী শরণার্থী শিবিরগুলোতে চলমান অভিযানের অংশ।
নূর শামস থেকে ধারণ করা ভিডিওতে সামরিক বুলডোজারগুলোকে ঘনবসতিপূর্ণ শিবিরের খালি ভবনগুলোর সামনে রাস্তা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েলের দখলে থাকা পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে, বিশেষ করে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে। মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, তখন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী বা বসতি স্থাপনকারীদের হাতে অন্তত ৮৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই যোদ্ধা।
অন্যদিকে ইসরায়েলের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, একই সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনি হামলা বা ইসরায়েলি অভিযানের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ৩২ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক সেনা সদস্যও রয়েছেন।
সূত্র : এএফপি
