
চট্টগ্রাম বন্দরসহ যেকোনো আন্তর্জাতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, আমাদেরকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তির চক্রান্তকে মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য দরকার জনগণের বৃহত্তর ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করা। চট্টগ্রাম বন্দরসহ যেকোনো আন্তর্জাতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফারাক্কা লংমার্চের ৫০ বছর উপলক্ষে ‘ভারতের নদী আগ্রাসন প্রতিরোধ করুন, অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হোন’ এই দাবিতে গণসংহতি আন্দোলনের সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে কিংবা নদী ও প্রাণ প্রকৃতি রক্ষার আন্দোলনের সুউচ্চ প্রতীক হচ্ছেন মওলানা ভাসানী। আজকে ৫০ বছর বার্ষিকীতে আমাদের আবারো ভাসানীর কাছে ফিরতে হবে। কেননা ভারত-রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতি যে অন্যায্য পররাষ্ট্রনীতি ও অবস্থান অব্যাহত রাখছে- সেগুলোকে প্রতিহত করতে মওলানা ভাসানীর দেখানো পথ অনুসরণযোগ্য। ভাসানী বলতেন, নদীর পানি কেবল মানুষের জন্য নয়, এতে সব প্রাণি ও প্রাণের হক জড়িত। বর্তমানে ৫৪টি অভিন্ন নদীতে ভারত বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে রেখেছে। কাজেই বিপুল আন্দোলন সংগ্রাম তথা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তথাকথিত লোকদেখানো ভারতবিরোধীতা দিয়ে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত হবে না বরং ভারতের সঙ্গে যৌথ জায়গাগুলোর মীমাংসা করতে হলে দ্বিপক্ষীয়ভাবে যদি সমাধান না হয়, তবে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের সেগুলো তুলতে হবে।
সাকি আরও বলেন, সেই সঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশকে গড়তে হলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত যথার্থভাবেই গণমানুষের জন্য হতে হবে। বর্তমান সংকটগুলোতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ হলো সব সমস্যার সমাধানে দ্রুত সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তা সমাধান করা। একটা পক্ষের (নিজেদের) আন্দোলন ন্যায্য; কিন্তু আরেকটা পক্ষের আন্দোলন অন্যায্য- এরকম দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে পারে না। মবতন্ত্রের মাধ্যমে যে হামলা হচ্ছে সেগুলো বন্ধ করুন। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করে বাংলাদেশকে একটা যথাযথ উত্তরণের দায়িত্ব পালন করুন।
জনগণের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি হয় এরকম কোনো তৎপরতা চালিয়ে নিজেদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন না করার আহ্বান জানান তিনি।
নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক নদী চুক্তি অনুযায়ী সালিশি হবে। আন্তর্জাতিক নদী চুক্তি অনুযায়ী সালিশি বিধান ছাড়া যেকোনো চুক্তি হলো বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতারণা। তিনি বলেন, দিনের পর দিন তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর না করে ফেনী নদী থেকে পানি তুলে নেওয়া হয়, আমাদের ৫৪টি নদীর উপর বাঁধ নির্মাণ করে নদীগুলো শুকিয়ে মারা হচ্ছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য বাচ্চু ভুইয়া, দীপক কুমার রায়, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, সদস্যসচিব মাহবুব রতন দক্ষিণের আহ্বায়ক আলীফ দেওয়ান, সদস্যসচিব সেলিমুজ্জামান, বাঞ্চারামপুর উপজেলার সংগঠক শামিম শিবলীসহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতারা।