
নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার একাটুনা ইউনিয়নটি এক নামেই সবার কাছে পরিচিত, ক্রিকেট প্লেয়ার এসোসিয়েশন অফ ৬নং একাটুনা এর জন্য। ক্রিকেট খেলা ছাড়াও যে কোনো দুর্যোগে এলাকার মানূষ সব সময় সংগঠনটির সদস্যদের পাশে পাচ্ছে। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই সংগঠনটি বন্যা দুর্গতদের জন্য সাহায্য, স্কুলের পরিচ্ছন্নতা, এলাকার বাজারের পরিচ্ছন্নতা, গ্রামের ব্যবসায়ীদের সংগঠিত করন, গরীব ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য ডোনেশনের ব্যবস্থা করা সহ এরকম বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত আছে। এই ক্লাবটি এলাকার সম্প্রদায়ের কাছে একটি জনপ্রিয় সামাজিক উন্নয়ন প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। এই সংগঠনটির ৩৯ সদস্যদের প্রত্যেকেই প্রায় তরুণ। এই খ্যাতি যেন এখন কাল হয়েছে ক্লাবের সদসদের জন্য। এই ক্লাবের টীম লিডার মোঃ গোলাম কিবরিয়া উজ্জল আমাদের প্রতিবেদককে জানান, ক্ষমতাসীন ক্যাডারদের দৌরাত্বে তাদের পক্ষে ক্লাবটি চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
তাদের ক্লাবের এই জনপ্রিয়তা মৌলভীবাজার সদর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের ক্যাডারদের নজরে পরে এবং বেশ কয়েকবার, ছাত্রলীগের ক্যাডাররা তাকে তাদের দলে যোগ দেওয়ার জন্য জোর করেছিল। কারণ, তারা ভেবেছিল অদূর ভবিষ্যতে যদি আমরা এই কমিউনিটি ক্লাব থেকে সবাই বিরোধী দলে যোগদান করি অথবা কোনো কারণে বিরোধী দলকে সমর্থন করি তাহলে তারা ক্ষমতা হারাতে পারে, যেটা মোঃ গোলাম কিবরিয়া উজ্জল এর মতে সম্পূর্ণ অমূলক ধারণা। উজ্জল তাকে উত্তর দিয়েছিলো যে, সে একজন সমাজকর্মী এবং তারা কখনো উন্নয়নের জন্য নাগরিক তহবিল ব্যবহার করার কথা ভাবেন না, তিনি তাদের দলে যোগ দিতে অস্বীকার করেছিল এবং বলেছিল যে, তার ক্লাবের কোনো সদস্য তাদের অর্থনৈতিক অথবা সামাজিক সুবিধার জন্য কোন রাজনৈতিক দলে যোগদান করবেনা।
কিন্তু এর পরেও উজ্জল ও তাদের ক্লাবের সদস্যদেরকে আসন্ন জাতীয় ইলেক্শনে আওয়ামীলীগের হয়ে ক্যাম্পেইনার হিসেবে কাজ করার জন্য বলে। তিনি আরো বলেন, যদি আমরা আওয়ামীলীগের হয়ে কাজ করতে রাজি হই এবং তাদের স্বার্থে কাজ করি, তাহলে নির্বাচনের পর, তাদের দল আমাদের পক্ষে কাজ করবে। অন্যথায় আমাদের ক্লাব, কখনো টিকে থাকতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়। তবুও, উজ্জল কোনো রকম দুর্নীতির সাথে জড়িত হতে অস্বীকার করেন। এরপর ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান তাকে দেখা করতে বলে এবং এইবলে সন্দেহ পোষণ করে যে, আমরা কোনো সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত কিনা। উজ্জল তা অস্বীকার করেন এবং তাদের ক্লাব কোন রাজনৈতিক দলের ক্যাম্পেইনার হিসেবে কাজ করবেনা বলে জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে স্থানীয় ছাত্ৰলীগ ও যুবলীগ দলের ক্যাডাররা, ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ ছত্র ছায়ায় ও রাজনৈতিক ভাবে পক্ষপাত দুষ্ট পুলিশের সহযোগিতায় তাদের ক্লাবটিকে ইলেকশন ক্যাম্পেইনের অফিস হিসাবে দখল করে নেয়। এই ব্যাপারে জিডি করতে গেলে, লোকাল থানার পুলিশ জিডি নিতে অস্বীকার করে, উল্টো আরো তাদেরকে উপদেশ দেয় ক্লাবে না যেতে। পুলিশের কাছে এটি শুধু নির্বাচনকালীন ক্যাম্পেইন, যা আদতে সত্য নয়। তাদের ক্লাবের প্রেসিডেন্ট জনাব সিদ্দিকুর রহমান মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারেন্টেড এর কাছে এই অবৈধ দখলদারিত্ব ও ছাত্ৰলীগ ক্যাডারদের নির্যাতনের ব্যাপারে একটি লিখিত কমপ্লেইন করার পরেও পুলিশ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
স্থানীয় প্রশাসনের ছত্র ছায়ায় ছাত্রলীগ ক্যাডারদের এই ধরনের আচরণ গোটা দেশে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। সব চেয়ে দুঃখ জনক ব্যাপার হোল, ক্রিকেট প্লেয়ার এসোসিয়েশন অফ ৬নং একাটুনা শুধু ক্রিকেট খেলার ক্লাব নয়, বরং এটি একটি সমাজসেবামূলক মহতী প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় জনগণ ও ছাত্রলীগ এর এই দখলদারিত্ব ভালো ভাবে গ্রহণ করছেনা। এমতবস্থায় এই ক্লাবের টীম লিডার মোঃ গোলাম কিবরিয়া উজ্জল প্রতিবেদকের মাধ্যমে, সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছে ক্লাবটির হয়ে সোচ্চার হওয়ার আকুল আবেদন জানিয়েছেন।